• HOME
  • AWARDS
  • Search
  • Help
Current time: 30-07-2018, 12:27 AM
Hello There, Guest! ( Login — Register )
› XXX STORIES › Bangla Golpo Choti v
« Previous 1 2 3 4 5 6 7 ..... 9 Next »

Romantic নিষিদ্ধ সেতু || কামদেব

Verify your Membership Click Here

Pages ( 2 ): « Previous 1 2
Thread Modes
Romantic নিষিদ্ধ সেতু || কামদেব
kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#11
12-05-2015, 11:43 AM



।।১১।।


কিছুক্ষন পর মুসাফির খানার সামনে জিপ থামে।ওসি এসে স্যালুট করে।পুলিশকে ঢুকতে দেখে রিসেপশন তটস্থ।একটি মহিলা এগিয়ে জিজ্ঞেস করে,স্যর আপনি?
--আমাকে বলুন,৪এ রুমের ডিটেলস।
--জাস্ট এ মিনিট।মহিলা খাতা দেখতে থাকে।
--কিপ ইট সিক্রেট।এস পি বলেন।
--ও.কে স্যর।হ্যা পেয়েছি।মি.এণ্ড মিসেস সেন।এরা পাঁচ-ছ মাস ধরে এখানে আছেন।গুড পেয়ার স্যার।
--পুরো নাম?
--নীলকান্ত সেন,স্যর ম্যাডামের নাম দেওয়া নেই।
--আমি একবার দেখতে চাই।
একটা বেয়ারাকে ডেকে মহিলা বলে,স্যরকে নিয়ে--।
কথা শেষ করতে নাদিয়ে নীল বলে,দরকার নেই।কিপ ইট সিক্রেট।
--স্যরি স্যর। রিসেপশনের মেয়েটি থতমত খেয়ে গেল।
কিছুটা হেটেই হদিশ পাওয়া যায় এ্যানেক্স বিল্ডিংযের।পুরান বাড়িটার নীচে দাড়ান কয়েক মূহুর্ত।আশপাশের পরিস্থিতিটা খতিয়ে দেখেন এসপি।বেশিক্ষন দাঁড়ানো ঠিক হবে না।
আশপাশের দোকানদাররা সন্ত্রস্তভাবে লক্ষ্য করছে।ওসি বুঝতে পারে না স্যার ঠিক কি জন্য এসেছেন।পরিচয় নেই কিন্তু আগে স্যারের কথা শোনা ছিল।অনেষ্ট অফিসার।
নীল ওসিকে জিজ্ঞেস করে,এণ্ট্রান্স কি এই একটাই?
--হ্যা স্যার।পাশে একটা এণ্ট্রান্স আছে দোকানদারদের বাথরুমে যাবার কিন্তু উপরে ওঠার এই একটাই সিড়ি।
নীল মনে মনে হিসেব করে নিয়ে ওসিকে বলল,দু-জন সিভিল ড্রেস বলেছিলাম--।
ওসির ইশারায় দুজন লোক এগিয়ে আসে,ওসি জিজ্ঞেস করে, আমি যাব স্যার?
নীলের মনে হল ওসিকে নীচে রাখা ঠিক হবেনা।স্থানীয় থানার সঙ্গে এদের অনেক সময় একটা যোগাযোগ থাকে।নীল বলল,ঠিক আছে আপনি আমার সঙ্গে আসুন।
তিনতলার ৪এ ঘরে একজন মহিলা বয়স খুব বেশি হলে ২৫/২৬, কথা বলছেন ফোনে।
--কোন ট্রেনে আসছো?...না,দরকার নেই,এমনি জিজ্ঞেস করলাম.....বেরোতাম, দরকার ছিল কিন্তু..না তেমন কিছু না.....খারাপ ত কিছু দেখছি না...তুমি না এলে কি করে বেরোবো....পার্টিকে ফোন করছি...আচ্ছা রাখছি....হ্যা বলো....না কাউকে তো দেখছিনা,কেন কিছু হয়েছে?.....না তা বলিনি তুমি পুলিশের কথা বললে....ঠিক আছে রাখছি? মিসেস সেন বিরক্তি নিয়ে ফোন রেখে দিল।
তিনতলায় উঠে ওসিকে প্যাসেজে দাড় করিয়ে রেখে নীল একাই দরজায় নম্বর দেখে কয়েক মুহূর্ত দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ভিতরের দৃশ্যটা অনুমান করার চেষ্টা করে।একটা মহিলা কণ্ঠের অস্তিত্ব টের পায়,একা না আর কেউ আছে? কিছুক্ষণ পর নীরব।কি ব্যাপার তার উপস্থিতি কি টের পেয়েছে?দরজায় মৃদু টোকা দিল।
মিসেস সেন ফোন সবে নামিয়ে রেখেছেন,দরজায় শব্দ হতে অনুমান করার চেষ্টা করেন এখন কে হতে পারে? মিসেস সেনের ভ্রু কুচকে যায়।এখন তো কোন এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নেই।গাড়ি আসার কথা ছিল সাতটায়,মানা করে দিতে হবে। সাতটায় নয় নটার আগে পারবে না।পার্টি আজকের ফ্লাইট ধরে সিঙ্গাপুর চলে যাবে। সেখান থেকে হংকং।তার আগে মিসেস সেনের সঙ্গে একরাতের মৌজ।মালদার পার্টি।
দরজা খোলার আগে মিসেস সেন জিজ্ঞেস করেন,কে-এ-এ?
--পুলিশ।দরজা খুলুন।
পুলিশ শুনে বুক ধড়াস করে ওঠে। দিশাহারা বোধ করে্ন মিসেস সেন।ছমাস ধরে আছেন এই রুমে কখনো পুলিশ আসেনি।বলু থাকলে চিন্তা ছিল না।একা মহিলা কি করবেন বুঝতে পারে্ন না।
বাইরে থেকে গলা পাওয়া গেল, কি হল দরজা খলুন।
না খুললে সন্দেহ আরো বাড়বে,দেরি না করে দরজা খুলে দিলেন।ভুত দেখার মত চমকে ওঠে দীপালি।ভুল দেখছে নাতো?নীলের অবস্থা তথৈবচ,কয়েক মূহুর্ত দাঁড়িয়ে থাকে স্থানুবৎ। এখানে এভাবে দীপালিকে দেখবে কোনদিন মনে হয় নি।তারপর স্থির হয়ে বলে, বলদেওর সঙ্গে তোমার বিয়ে হয়নি?
--না।
--তাহলে মিসেস সেন কে?
--আমি।
--তোমার স্বামির নাম জানতে পারি?
--এই ব্যাপারে আমি কোন উত্তর দেবো না।
--তোমার স্বামী নীলকান্ত সেন?
মিসেস সেনের মুখ লাল হয় বলে,বলেছি তো আমি কোন উত্তর দেবো না।
--মনে হচ্ছে আমার ভুল হয়েছে,স্যরি। তোমাকে অনেকদিন পর দেখলাম।
--তা চার বছর হবে...শোনো তোমার ভুল হয় নি। আগে ভুল করলেও,এবার ঠিক জায়গায় ঠিক সময়ে এসেছো।
--ঠিক জায়গা? আগে আমি একাই ভুল করেছি? তুমি কি জানো আমি কি জন্য এসেছিলাম?
--হ্যা ডাব্বু্র খোজে।ডাব্বু ওরফে ইসমাইল ওরফে বলদেও।এদের এক-আধটা নামে চলে না।দীপুর উদাস গলা।
--দীপু তুমি এসব জান? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে।
--সব কথা কি দাঁড়িয়ে শেষ করবে? ভিতরে আসবে না?
--তুমি তো বলোনি।
--পুলিশরাও এখন অনুমতি নেয়?
--তুমি আমাকে ব্যঙ্গ করছো?
--তার বেশি করার ক্ষমতা আমার নেই।দীপা চোখের জল আড়াল করে।
দু-পা ভিতরে ঢুকে বলল, কিন্তু আজ আর বসবো না।
-- আসামি ধরতে হলে তোমাকে বসতে হবে।ভেবেছিলাম তুমি অধ্যাপক বা ঐজাতীয় কিছু হবে,পুলিশ কোনদিন ভাবিনি।নিশ্চয়ই মারপিটও শিখেছো?
--তোমার পছন্দ নয়?নীলের অধীর জিজ্ঞাসা।
--আর আমার পছন্দ!একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।
--তুমি একথা বলছো কেন?
--এ্যাটাচ বাথরুমের সিস্টার্নে দেখো, জল নেই।খুললে দেখতে পাবে,কত বুলেট লুকিয়ে রাখা আছে।বলদেও আসার সময় হয়ে এল।
--তুমি কি করছো বুঝতে পারছো?
--আমি আরো বেশি করতে চেয়েছিলাম নীল।তুমি দিলে কোথায়?
নীলের মুখে কথা যোগায় না।মুগ্ধ হয়ে দীপাকে দেখে।
--শোন নীল,তুমি একা এসেছো? ও কিন্তু সাংঘাতিক,সব সময় অস্ত্র থাকে।
--তুমি কোন চিন্তা কোর না।সঙ্গে লোক আছে।
দীপা ঘন ঘন প্যাসেজে উকি দিয়ে দেখতে থাকে।একসময় জিজ্ঞেস করে,তোমার লোক কই,কাউকে তো দেখছি না।
--আছে সাদা পোষাকে সিড়ির ওপাশে আছে।
--না-না আমার ভয় করছে,তুমি জানোনা লোকটা কি ধরনের বদমাইশ।তোমার কিছু হলে আমি নরকেও শান্তি পাবো না। তুমি কয়েকজন কনেষ্টবলকে ডেকে নাও প্লিজ।দীপার চোখে উৎকণ্ঠা।
হঠাৎ জড়িয়ে ধরে দরজার আড়ালে নীলকে ঠেলে সরিয়ে দেয় দীপা।নীল কোমরে পিস্তল চেপে ধরে।দীপা দরজা হতে মুখ বের করে বাইরে দেখে বলে,আসছে। নীল আমার ভয় করছে--।
গায়ে লাল-কালো চেক রঙের টি-শার্ট জিন্সের প্যাণ্ট কাধে ঝোলানো ব্যাগ।বলদেও ঘরে ঢুকতেই নীল পিস্তল লক্ষ্য করে বলে,ডোণ্ট মুভ।
বলদেও দাতে দাত চেপে দীপাকে একপলক দেখে বলে, হারামি--খানকি মাগি!
পেট লক্ষ্য করে নীল অদ্ভুত কায়দায় সবুট লাথি মারতে কাৎ হয়ে পড়ে যায় বলদেও। সঙ্গে সঙ্গে দুজন সান্ত্রি সহ স্থানীয় থানার ওসি এসে চেপে ধরে বলদেওকে। বলদেওর কোমর হতে রিভলবারটা বের করে নেয় নীল,একজন কন্সটেবলকে বলল,বাথরুমের সিস্টার্ণে দেখো বুলেট রয়েছে।তারপর দীপার দিকে তাকিয়ে বলল,ধন্যবাদ।
দীপার মুখটা শুকিয়ে যায়,নীল তাকে ধন্যবাদ দিচ্ছে? বেরোবার আগে একবার পিছন ফিরে তাকায় নীল।
দীপা বলে,তোমার কাছে একটা কথা জানার ছিল।
--আমিও তোমার অনেক কথা শুনতে চাই।আর একদিন আসবো।
--সেদিন সাদা পোষাকে এসো।এই উর্দির ব্যবধান থাকলে সহজভাবে কথা বলতে পারবো না। ফোন করে এস।
দীপার গলায় তীব্র আকুতি লক্ষ্য করে নীল।
--সেদিন তোমার গান শুনবো কিন্তু...।পিছন ফিরে হেসে দলবল নিয়ে বেরিয়ে গেল নীল।
রাস্তায় ভীড় জমে গেছে।কোমরে দড়ি বেঁধে বলদেবকে ভ্যানে তোলা হল।বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে দীপা।নীল মুখ তুলে দেখল দীপার চোখে টল টল করছে মুগ্ধতা।
--স্যার আমরা আসি?ওসি জিজ্ঞেস করে।
ওসির কথায় সম্বিত ফেরে নীল বলল,হ্যা আজকের রাতটা হাজতে থাকুক।কাল দেখা হবে।স্যালুট করে ওসি গাড়ী নিয়ে চলে গেল।

ক্রমশ]
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


babi_sonai007 Offline
New Bee
*
Joined: 21 Mar 2015
Reputation: 0


Posts: 15
Threads: 0

Likes Got: 0
Likes Given: 1


db Rs: Rs 25.6
#12
12-05-2015, 07:14 PM
Darun Jomeche mama chaliye jan aamra acchi aapnar sathe
 •
      Find
Reply


kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#13
12-05-2015, 08:58 PM




।।১২।।


সংবাদ পত্রে পরের দিন খবরটা বেশ বড় করে বেরোল।কদিন ধরে চলল,একেবারে হিন্দি সিনেমার কায়দায় কিভাবে আসামী পড়ল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ। পুলিশ মহলে সাড়া পড়ে গেল।জেরা করে দলের আরো অনেককে ধরা হল,মিলেছে প্রচুর অস্ত্র-শস্ত্র।এত কাণ্ডের মধ্যেও নীলের মনে একটা মুখ ভেসে আছে সর্বক্ষন।নীলকান্ত সেনের স্ত্রী মিসেস সেন।নীলকান্ত বলে সত্যিই কি কেউ আছে?যদি না-ই থাকে তাহলে এত নাম থাকতে কেন নীলকান্ত সেন?দীপাই দিতে পারবে এই প্রশ্নের উত্তর।
হোটেল থেকে লোক এসে দুঃখ প্রকাশ করল।দীপা অবাক হয়ে বলে, একজন এ্যাণ্টিসোশাল ধরা পড়েছে তাতে দুঃখ প্রকাশের কি হল?
--ম্যাম উনি আপনার হাজব্যাণ্ড নন?
--হাজব্যাণ্ড, আমার?ওহ গড শুনছেন লোকটা এতবড় ক্রিমিন্যাল,আমি তো ভাবতেই পারিনি।
ঘুরে ফিরে দৃশ্যটা খালি চোখের সামনে ভেসে উঠছে।নীলের একলাথিতে বলু একেবারে ছিটকে পড়েছিল।অনেক বদলে গেছে নীল।যাবার আগে নীল বলেছিল আসবে একদিন,সত্যিই কি আসবে নাকি তাকে সান্ত্বনা দিয়ে গেল।
একদিন শিবেন বলেছিল সেদিন কিন্তু তার অর্থ বুঝতে পারেনি।বাইরে থেকে যা দেখা যায় সেটাই সব নয় গভীরে চাপা থাকে এক অন্য সত্য।তা দেখার মত চোখ যাদের নেই তারা করুনার পাত্র। ফুল ফোটার ইঙ্গিত থাকে বাতাসে রসিক মৌমাছিরা তা বুঝতে পারে।যথা সময়ে সংকেত পেয়েছিল নীল কিন্তু তার অর্থ বুঝতে পারেনি।যখন বুঝলো অনেক দেরী হয়ে গেছে।
বলু ধরা পড়েছে এই সাফল্যের চেয়ে আরো বেশি নীলের কাছে ,এতকাল পরে দীপার সঙ্গে দেখা হওয়া।সেদিন থেকে মনটা আচ্ছন্ন করে রেখেছে দীপা।এই শয়তানটা দিনের পর দিন না জানি কত কষ্ট দিয়েছে দীপুকে।দীপা চলে যাবার পর ওদের সংসারের আবহাওয়াটাই বদলে গেছে একেবারে।আণ্টিকে দেখলে বোঝা যেত না কিন্তু ভিতরে ভিতরে বহন করছিলেন এক যন্ত্রণা।যতই হোক উনি তো মা।
ভাইজানের এত খ্যাতি তবু যেন মনে শান্তি নেই।সারাক্ষন মুখ বুজে বসে থাকে,দিলুর ভাল লাগে না।
--ভাইজান তোমার মন খারাপ?
--অ্যা? লজ্জা পায় নীল,জিজ্ঞেস করে,কিছু বলছিস?
--তুমি চুপচাপ বসে থাকলে ভাল লাগে না।আমাকে বলো তোমার কি হয়েছে?
--মা কোথায় রে?
--আম্মু পুজায় বসেছে।চা খাবে?
--তুই চা করবি?
--কেন পারবো না?আমাকে তুমি কি ভাবো?
সরমা চা নিয়ে ঢূকে বলে,থাক তোমারে চা করতে হবে না।
--দেখেছো ভাইজান, না কইতে মায়েরা মনের কথা কেমন বোঝে?
নীল মনে মনে বলে,আমি বুঝতে পারিনি।বুঝলে জীবনটা হয়তো অন্য রকম হত।কাল অফিস যাবে না।দীপাকে ফোন করে জানাবে।যদি ওর সময় থাকে দেখা করতে কাল যাবে। শোধরানোর সময় কি পার হয়ে গেছে? দীপা বলছিল কি যেন জানতে চায়।কি জানার থাকতে পারে এতদিন পর?সব কেমন বিস্বাদ মনে হয়।শিবেনকে মনে পড়ল,কাছে থাকলে কথা বলে শান্তি পাওয়া যেত।
সকাল হতে লোকচলাচল শুরু হয় রাস্তায়।সন্ধ্যে বেলা বেরোতে হবে,শাসালো পার্টি।গুজরাটি ব্যবসায়ী, সারা দেশে ব্যবসা আছে, নামী হোটেলে উঠেছে।সন্ধ্যে বেলা গাড়ি আসার কথা।ধীরে ধীরে প্রস্তুত হলেই হবে।কদিন আগে দীপার উপর দিয়ে যেন ঝড় বয়ে গেল।খুব খেপে গেছে বলদেও।ছাড়া পেলে ওর প্রথম কাজ হবে দীপার উপর প্রতিশোধ।ফোন বেজে ওঠে।এত সকালে আবার কে ফোন করল?আজ আর অন্য এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নেওয়া সম্ভব নয়।বিরক্তি সহ সুইচ অন করে বলে,মিসেস সেন স্পিকিং।
--আমি নীল---।
হাত কেপে যায়,দীপার মুখে কথা যোগায় না।
--হ্যালো আমি নীল-।
--এক মিনিট ধরুন মানে ধরো মানে--।দীপার দম আটকে আসে যেন।
--তুমি কি ব্যস্ত?
--ব্যস্ত? না-না ব্যস্ত না--বলো নীল।ফোন এক কান হতে আরেক কানে লাগায়।
--তোমার কি হয়েছে দীপু?
--কিছু না,তুমি বলো,আমি শুনছি।নীল তুমি কি বলছিলে?
--আজ আসলে অসুবিধে হবে?
--একথা কি জিজ্ঞেস করতে হয়? তুমি এসো--আমার কোন অসুবিধে হবে না।
--সন্ধ্যে বেলা যাচ্ছি।ফোন কেটে দেয় নীল।
ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল যেন।আজ এরকম কেন হল?এমন তো হয় না,নম্বর টিপে ফোন করে।ও প্রান্ত হতে শোনা যায়,হ্যা বলুন ম্যাডাম।
--আজকের এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট বাতিল করতে চাই।
--কি বলছেন ম্যাডাম?এতে আপনার রেপুটেশন খারাপ হয়ে যাবে।প্যাটেল সাহাব বহুৎ ইনফ্লুয়েন্সিয়াল আছেন।এরকম করবেন না ম্যাডাম--।
--আমার শরীর ভাল নয়।দীপার কণ্ঠে দৃঢ়তা।
দীপার মনের মধ্যে তীব্র আলোড়ন শুরু হয়।কি করবে কিছু বুঝে উঠতে পারে না।সন্ধ্যেবেলা আসবে এখনো অনেক দেরী।আলমারি হতে মদের বোতলগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে।কোথাও যেন সিগারেটের একটা টুকরো না পড়ে থাকে। দিশাহারা বোধ করে,কোথা হতে শুরু করবে ভাবতে ভাবতে দীপা শুয়ে পড়ল বিছানায়।একটু বিশ্রাম দরকার।বিশ্রাম,অশান্ত মনটাকে শান্ত করতে হবে।
কোনকিছু না ভেবেই নাম নিয়েছিল মিসেস সেন।অবচেতনে হয়তো ছিল ডাক্তার বোসের সঙ্গে ব্যবধান আর একজনের সঙ্গে সম্পর্কের বাসনা। তখন ঘুনাক্ষরে মনে হয় নি নীলের সঙ্গে আবার দেখা হবে।কি ভাবল নীল? ভাগ্যিস নীলকণ্ঠ না লিখে নীলকান্ত লিখিয়েছিল না হলে লজ্জার সীমা থাকতো না। এক অদ্ভুত সুখানুভুতির স্পর্শ পায় দীপা।ঘুরে উপুড় হয়ে শোয়।নীল এখনো সেই ক্যাবলাকান্ত আছে।তবে সাহস আছে, বলদেও আসছে শুনেও নির্বিকার।নীল কেমন অদ্ভুত কায়দায় লাথি মারল দৃশ্যটা এখনও বিশ্বাস করতে পারছে না।শুনেছে পুলিশে নাকি জুডো ক্যারাটে প্রভৃতি ট্রেনিং নিতে হয়। বেলা হল এবার স্নানে যেতে হবে।বাথরুমে গিয়ে নিজেকে নিরাবরন করে,আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে।মেয়েরা ফর্সা হবার জন্য কত কি লাগায়।দীপার মনে হয় একটু চাপা রঙ হলে ভাল হত।এত ক্যাটকেটে ফর্সা ভাল লাগে না।স্তনযুগল ঈষৎ আনত, ঝুলে পড়েনি।জানোয়ারগুলো এমন করে যেন ছিড়ে খাবে।অনেক চেষ্টা করেছে মুখে চুমু আর মাই টেপা এড়াতে কিন্তু সবসময় সম্ভব হয় না।এতদিন খেয়াল করেনি পেটে একটা খাঁজ পড়েছে।জিমে যাওয়া দরকার না হলে শরীরের দফারফা।বাড়ি বসে যোগচর্চা করা যেতে পারে।এত ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফেরে তখন আর ইচ্ছে হয় না। পরিস্কার তাহলেও গুদের উপর রেজার বুলায়।হাত দিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করে,খোচা লাগছে না একেবারে মসৃন। শরীরের প্রতিটি খাঁজে খাঁজে সাবান ঘষে দীপা, যাতে একটুও মলিনতা না থাকে।আজ আর বড় বাড়িতে লাঞ্চ করতে যাবে না।ফোন করে পার্শেল পাঠাতে বলবে।নীল সন্ধ্যে বেলা আসবে, দুপুরেই আসতে পারতো। দীপার আর যেন দেরী সইছে না। বিরহের বেদনাতেও মিশে থাকে ভিন্নতর সুখানুভুতি আগে তার জানা ছিল না।

খুব হালকা লাঞ্চ নিল দীপা।সুপ রুটি আর স্যালাড।বিয়ার দিয়ে গলা ভিজিয়ে ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে বসল।দুপুরে ঘুমানোর অভ্যেস নেই।কখনো ইজিচেয়ারে একটু ঝিমুনি এসে যায় না তা নয়।পোষাক পরবে?শাড়ি পরলে বয়স বেশি মনে হয়।টপলেস সালোয়ার-কামিজই ভাল।শাড়ির চেয়ে কম্ফরটেবল। আবার কে ফোন করছে?
--হ্যালো?
--মিসেস সেন?প্লিজ ফোনটা কাটবেন না।আপনি কি রেমুনারেশনের ব্যাপারে কথা বলবেন?যদি বলেন আরো হাজার--।
-- হাজার কেন লাখেও আজ হবে না,আজ আমি ব্যস্ত, প্লীজ আজ আমাকে ফোন করবেন না। এর আগে কাসটোমার ফিরিয়েছি বলুন?
--না মানে প্যাটেল সাহেব আপনার জন্য গো ধরে বসে আছেন।আপনার যদি অন্য কাস্টোমার--।
--কোনো কাস্টোমার নয়,আমার হাজব্যাণ্ড--আমার স্বামী,বুঝতে পেরেছেন?প্লিজ আমাকে আর ডিস্টার্ব করবেন না।বিরক্তির সঙ্গে ফোন কেটে দিল দীপা।
নীল গান শুনতে চেয়েছে।চর্চা ছেড়ে দিয়েছে কতকাল হল কিন্তু নীলকে ফেরাবে সাধ্য কি?যখন বেণী দুলিয়ে মঞ্চে উঠে হারমনিয়ম বাজিয়ে গান গাইত সেদিনের কথা এখনো মনে রেখেছে নীল।দু-চোখ ঝাপসা হয়ে যায়।চোখ মুছে উঠে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবিম্বকে চোখ টিপে জিজ্ঞেস করে,কি ভাবছো মিসেস দীপালি সেন? কোন মোক্ষম অস্ত্রে এসপি সাহেবকে ঘায়েল করবে? কাল পুলিশের পোষাকে দেখেও ঠিক চিনতে ভুল হয়নি। নীল কি এখনো বিয়ে করেনি?প্রশ্নটা মনে হতে মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে যায়।বিয়ে করতেই পারে,কতবড় চাকরি করে বয়স হয়েছে। নীল আসবে বলেছে আসুক,বিয়ে করেছে কি করেনি তাতে কি যায় আসে।হাতের সামনে বিয়ারের গেলাসটা তুলে এক চুমুকে শেষ করে দিল।

ক্রমশ]
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#14
13-05-2015, 10:22 AM




।।১৩।।




এত টেনশন হচ্ছে,একটা সিগারেট ধরায় দীপা।সন্ধ্যে বেলা আসবে,কটার সময় জিজ্ঞেস করা হয়নি।এমন নার্ভাস লাগছিল জিজ্ঞেস করবে কি, ভাল করে কথা বলতেই পারছিল না।মিতুর কথা মনে পড়ে দেখা হয়নি কতকাল।এতদিনে নিশ্চয়ই মাধ্যমিক পাস করে গেছে।বাপি মাম্মি কেমন আছে কে জানে।তাদের মনে পড়ে কি দীপার কথা?চোখের পাতা ভিজে যায়।জানলা দিয়ে সিগারেটের টুকরো ফেলতে গিয়ে দেখলো সূর্য অস্ত গেছে।ঘন মেঘে ঢেকেছে আকাশ। দীপার মুখটা ম্লান হয়ে গেল।বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।এখন জুলাই মাস।কে যেন এক ফুয়ে আশার বাতিটা নিভিয়ে দিল এক নিমেষে।জানলাটা বন্ধ করে এসে উদাস মন হারিয়ে যায় অতীতে।ছোট বেলায় পড়া একটা কবিতার লাইন মনে এল,'নীল নব ঘন আষাঢ় গগনে তিল ঠাই আর নাই রে/ওগো আজ তোরা যাসনে,যাসনে ঘরের বাইরে।'ঝমঝমিয়ে নামল বৃষ্টি।এই বাদলে আর কোন আশা নেই।ম্লান হাসি ফোটে ঠোটের ফাকে।একবার ফোন করে দেখবে নাকি?একটা সিগারেট ধরায় নেহাৎ অবহেলায়।অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়।ভাল কিছু আশা করেনা,যতদিন বাঁচবে টেনে নিয়ে যেতে হবে এই জীবন।কে যেন দরজায় নক করছে?নাকি হাওয়ার দাপট?
কান খাড়া করে সজাগ হয় দীপা।তাড়াতাড়ি সিগারেট নিভিয়ে দরজার কাছে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,কে-এ-এ?
--দীপু আমি,দরজা খোলো।
কড় কড় করে কোথাও বাজ পড়ার শব্দ হল।বুকের ভিতর ধড়াস করে ওঠে।হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয় আর কি।দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ঢোকে নীল।জিন্সের প্যাণ্ট ব্লাক টি-শার্ট,ভিজে জবজব।খোলা দরজা পেয়ে এক ঝলক দমকা হাওয়া অন্ধকারে ঝাপিয়ে পড়ে ঘরে।দ্রুত দরজা বন্ধ করে নীলের দিকে তাকিয়ে বলে, ইস ভিজে একসা!একটা ছাতা নিয়ে বেরোতে পারোনি?
--কি করে জানবো,বেরোবার সময় আকাশ ছিল পরিস্কার।
--নাও জামাটা খোল।দীপা একেবারে কাছ ঘেষে নীলের জামা খুলতে যায়।একটা সুন্দর গন্ধ পায় নীল।
দীপার সামনে খালি গা হতে হবে ভেবে লজ্জায় কুকড়ে গিয়ে নীল বলে,না-না ঠিক আছে।ব্যস্ত হতে হবে না,এমনি শুকিয়ে যাবে।
সেই শান্ত লাজুক স্বভাব আমোদিত করে দীপুকে।তাকেই সব করতে হবে,অপেক্ষা করে ভুল করেছে।
--না ঠিক নেই।দীপা একরকম জোর করে জামা টেনে খুলে ফেলে।
নীল মাথা নীচু করে খালি গায়ে সঙ্কুচিত হয়ে বসে থকে।একটা তোয়ালে এনে দীপা ঘষে ঘষে নীলের মাথা মুছে দেয়।এখানেই থামল না,একটা শাড়ি এনে নীলকে বলল,এটা পরে প্যাণ্টটা খুলে দাও।
এই বাদলাতেও নীলের কপালে ঘাম দেখা দিল।নীল শাড়িটা হাতে নিয়ে বসে থাকে।
--কি হল বসে রইলে?আমি কি প্যাণ্টটাও খুলে দেব?
--না-না আমি খুলছি।নীল চমকে উঠে বলে।
--তুমি যে কি করে পুলিশে ঢুকলে?ক্যবলাকান্ত কোথাকার।নীলের চুল ঘেটে দিয়ে বলে দীপা।
--তুমি একটু অন্যঘরে যাবে?নীল আকুলভাবে বলে।
দীপার ওষ্ঠাধরে হাসি ঝিলিক দিয়ে গেল বলল,আচ্ছা আমি তোমার জন্য চা করে আনছি।তুমি প্যাণ্ট বদলাও।
শাড়িটা লুঙ্গির মত করে পরে নীল।বেশ দামী শাড়ি,হালকা যেন মনে হচ্ছে কিছুই পরেনি।সোফায় জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকল।একটা ট্রে-তে দু-কাপ চা নিয়ে ঢুকল দীপা,একটু ঝুকে থাকায় জামার ফাক দিয়ে পুরুষ্ট স্তনযুগল দেখা যাচ্ছে। বেশ সুন্দর লাগছে দীপাকে।ফর্সা রঙ যা পরে তাতেই মানায়।বাইরে বৃষ্টির শব্দ,নিঝুম পরিবেশ।চায়ের ট্রে নামিয়ে পাশে বসল দীপা।নীল চায়ের কাপ নিয়ে চুমুক দেয়।
--আচ্ছা নীল,বাপি মাম্মি আমার কথা বলে না? মিতু বোধহয় তার দিদিভাইকে ভুলে গেছে তাই না?
অপ্রস্তুত বোধ করে নীল,চোখ তুলে দীপার দিকে তাকাতে বুঝতে পারে দীপার চোখে বিপুল আগ্রহ।মৃদু স্বরে বলে,ও পাড়ায় যাওয়া হয় না বহুকাল।আমি এখন এসপির বাংলোয় থাকি।শিবেন বলছিল মিতু ডাক্তারি পড়ছে।
হতাশ স্বরে দীপা বলে,তাইতো আমিও কি বোকা দেখো,তোমার তো বাংলো পাবারই কথা।মাসীমাও নিশ্চয়ই তোমার সঙ্গে ---।
-- মা আমি আর মার এক ছেলে---।
--আর এক ছেলে?অবাক হয়ে তাকায় দীপা।
--আনোয়ার হোসেন দিলু।যখন ট্রেনিং-এ ছিলাম দিলুই তো মার দেখাশোনা করতো।বেটা এখন মার নয়নের মনি।আম্মু বলতে দিলু অজ্ঞান।আমি বলেছি শোনেনি কিন্তু দিলু মার কাজ করা বন্ধ করেছে।মা এখন আর লোকের বাড়ি কাজ করেনা।
--আনোয়ার হোসেন--মানে মুসলমান? মাসীমা জানে?
নীল হেসে বলে,মা কি বলে জানো?জাত ধর্ম আমাদের অনেক কিছু বদলে দিলেও স্নেহ প্রেম ভালবাসা মায়া ভক্তির গায়ে আঁচড়টি কাটতে পারেনি।সব কালে সব দেশে তা একই রয়ে গেছে।
--তোমার মার সঙ্গে আলাপ নেই,ভীষণ ইচ্ছে করছে মাসীমাকে একবার দেখতে।
চা পান পর্ব শেষ।নীল এখন অনেকটা সহজ,আগের মত আড়ষ্টভাব নেই।দীপার হাত নীলের কোলে। পাশে বসা দীপার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,তোমার কি জানার আছে বলছিলে তা কি জানা হয়েছে?
আশপাশে কোথাও প্রচণ্ড শব্দে বাজ পড়ে,চমকে জড়িয়ে ধরে নীলকে।দীপার নরম বুকের স্পর্শ নীলের বুকে, নীল বুঝতে পারছে বুকের উপর থর থর করে কাপছে দীপা।নীলের ভাল লাগে হাতটা দীপার পিঠে রাখে।দীপা কাধ থেকে মুখ তুলে নীলের দিকে তাকিয়ে বলল, উফ কি ভয় পেয়ে গেছিলাম।তারপর জিজ্ঞেস করল,তুমি কি জিজ্ঞেস করছিলে?
--আমি? হ্যা জিজ্ঞেস করছিলাম তোমার কি জানার ছিল জানা হয়েছে?
দীপার ঠোটের কোলে হাসি ঝলকে ওঠে।কি আর জানার আছে,একান্তে কথা বলার ইচ্ছে হয়েছিল তাই।আবার মনে হয় কত কি তো জানতে ইচ্ছে হয়,এখন সেসব জেনে কিইবা লাভ? তারপর ধীরে ধীরে দীপা জিজ্ঞেস করে,তুমি এখনো বিয়ে করোনি?করবে না?
জানলা খুলে জলের ছাট এসে পড়ে।দীপা দ্রুত উঠে জানলা বন্ধ করতে গেল।উফস যেন শব ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে দেবে।আকাশ কাপিয়ে কড় কড় শব্দে বজ্র নির্ঘোষ।আঁচল খসে গেছে দীপার সুডৌল ভারী নিতম্ব,মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।

ক্রমশ]
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#15
13-05-2015, 05:36 PM


।।১৪।।


দীপাকে তাকিয়ে দেখতে দেখতে ভাবে আরও সুন্দর হয়েছে দেখতে।একহাতে পাল্লা চেপে ছিটকানি দেবার চেষ্টা করে কিন্তু সামলাতে পারেনা।নীল উঠে গিয়ে জানলা চেপে বন্ধ করে দিল।দীপার শরীর নীলের বুকে সেটে আছে।নীল ফিরে এসে আবার সোফায় বসে।দীপা পাশে এসে জিজ্ঞেস করে,কই বললে নাতো?
একবার মনে হল বলে বিয়ে করেছে,কি প্রতিক্রিয়া হয় দীপার দেখতে ইচ্ছে করে।পরক্ষনে মনে হয় না অনেক কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা,নীল তাকিয়ে দেখে দীপার উদ্গ্রীব দৃষ্টি হেসে বলে, তোমাকে তো বললাম বাংলোয় আমরা তিন জন থাকি।
--তুমি কোন দিন কাউকে ভালবেসেছো?সত্যি করে বলবে।
--আমি মিথ্যে বলিনা। ছাত্রাবস্থায় একজনকে ভালবেসেছিলাম।
--এখন আর বাসোনা?দীপার বুকে শ্বাস আটকে থাকে।
--এখনো ভালবাসি,তাকে আমার পক্ষে ভোলা সম্ভব নয়।
--বাঃবাঃ এত? তা হলে তাকে বিয়ে করলে না কেন?
পরস্পর চোখাচুখি করে মৃদু হাসে দুজনে।মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নীল বলে,কি হবে এসব জেনে?
--না,বলো প্লিজ আমার জানা দরকার।
--সে আমাকে ভালবাসে কিনা আমার জানা নেই।উদাস গলায় বলে নীল।
--কোথায় থাকে বলবে?
--আমার পুরানো পাড়ায়।
--তার নাম জানতে পারি কি?
--অসুবিধে আছে।
--তার বাবা কি করেন?
--তিনি পেশায় চিকিৎসক।
দীপার বুকের মধ্যে কেপে ওঠে।নিজেকে সংযত করে বলে,তুমি তার বোনকে পড়াতে?
--তুমি তাকে চেনো নাকি?
--খুব ভাল করে চিনি।আর এও জানি সেও তোমাকে ভালবাসে,খুব ভালবাসে।তুমি কি তাকে তোমার মনের কথা বলেছিলে?
--ভরসা হয় নি।
--ভরসা হয়নি না তোমার ইগোতে লেগেছিল?যদি প্রত্যাখ্যাত হতে হয়,তাই না?
--সেও তো বলতে পারতো।কেন সে বলল না?উপরন্তু নানাভাবে উপেক্ষা করেছে।নীলের গলা ধরে আসে।আণ্টি বলা সত্বেও সে আমার কাছে পড়তে আসেনি।কেন এত দেমাক কিসের?
দীপার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে,অভিমানী গলায় বলে, বাজে কথা বলবে না।তুমি বলেছিলে তাকে?
--কেন বলব? ভাববে টাকার লোভে আমি আগ্রহ দেখাচ্ছি।
--না-না নীল তুমি জানো না,সে প্রতিদিন উদ্গ্রীব হয়ে থাকতো কখন তুমি বলবে 'এসো আমি তোমাকে অঙ্ক শেখাবো।'
দীপা আর ধরে রাখতে পারে না চোখের জল।উঠে যায় নিজেকে সামলাবার জন্য।চোখেমুখে জল দিয়ে আবার ফিরে আসে।নীলের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, তুমি এখনও ভালবাসো?
--তোমার বিশ্বাস হয় না?
--না গো আমি জানি,তুমি মিথ্যে বলতে পারো না।বলতে বলতে নীলের ঠোটে চুমু খায়।
নীল ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুটা হতচকিত।বাইরে বাজ পড়ার শব্দ হয়।তারপর ধীরে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, তুমি কি সত্যি বিবাহিতা?
--হঠাৎ এ প্রশ্ন?
--আমরা কি নতুন করে শুরু করতে পারি না?
দীপা এড়িয়ে গিয়ে বলে ,জানো নীল আমার গান গাইতে ইচ্ছে করছে।
--চমৎকার গানের গলা ছিল তোমার।নীলের মনে পড়ে পাড়ার জলসায় গান গেয়ে খুব নাম হয়েছিল।
--তুমি একবার চোখ বন্ধ করো।
--কেন?
--আহা করো না।দীপা আবদার করে।
নীল চোখ বন্ধ করে।এ আবার কি খেলা বুঝতে পারে না নীল।কিছুক্ষন পর দীপা বলে,চোখ খোলো।
একী অপার বিস্ময়?সাদা পাথরের মূর্তির মত দীপার নিরাভরন দেহ তার চোখের সামনে।রুপের ছটায় আলোকিত সারা ঘর।দীর্ঘ প্রায় সাড়ে-পাঁচ ফুটের মত উচ্চতা, প্রশস্ত বক্ষ উন্নত স্তনদ্বয় ঈষৎ আনত,নাভিমূল হতে ক্রমশ ঢাল সৃষ্টি করে মিলিত হয়েছে একবিন্দুতে। বস্তিদেশে একটুকরো পশমও নেই তকতকে উপত্যকা।মেরুদণ্ড ধনুকের মত বাক নিয়ে স্থুল উদ্ধত নিতম্ব। নীলের সারা শরীরে যেন বিদ্যুৎ প্রবাহ খেলে যায়।
দীপা দু-হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে,নীল আমার দেবতা, আমাকে গ্রহন করো।
--আমরা তো এখনো বিয়ে করিনি সোনা।
--আমাদের সামাজিক বিয়ে হয় নি তা ঠিক।কিন্তু মনে মনে আমি তোমাকে স্বামীত্বে বরন করেছি অনেক আগেই।তুমি জিজ্ঞেস করেছিলে,নীলকান্ত কে?
--হ্যা কিন্তু তুমি আমার প্রশ্নের উত্তর দাও নি।
--আজ সেকথা অর্থহীন।একটা নাম দিতে হয় তাই হোটেলের খাতায় বানিয়ে নাম দিয়েছি।
দীপা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে।নীল ত্রস্তে সরে গিয়ে বলে,না দীপা!
--এসো নীল আমাকে গ্রহন করো,পান করো আমার উষ্ণতা।আমাকে ধন্য করো।
--কিন্তু--কিন্ত--।নীল দ্বিধা ঝেড়ে ফেলতে পারে না।
--বুঝেছি।আর বলতে হবে না।করুন হয়ে যায় দীপার মুখ।
নীল উঠে দাঁড়িয়ে বলে,তুমি কিছুই বোঝোনি।কি মনে করো নিজেকে? আমি ক্যাবলাকান্ত আর তুমি?
নীল দুহাতে জড়িয়ে ধরে চুমু দেয় কপালে চোখে নাকে ঠোটে স্তনে নাভিতে যোনীতে।দীপা সুখের আবেশে চোখ বুজে থাকে।নীলের এই প্রকৃতি তার কাছে নতুন।বিছানায় চিৎ করে ফেলে বুকের উপর চড়ে বসে নীল।তলপেটে গাল ঘষে।শরীরের প্রতিটি কোষে ছড়িয়ে পড়ে অনাস্বাদিত সুখ।
--কি করছো তুমি নীল?
--তুমি আমাকে পাগল করেছো,তুমি জান না?দু-আঙ্গুলে চেরা ফাক করে নীল বাড়াটা ঢোকাতে চেষ্টা করে।বার বার পিছলে যায়।
--সত্যি তোমাকে নিয়ে আর পারিনা।এ্টাও কি আমাকে শিখিয়ে দিতে হবে?
দীপা দুহাতে চেরা দুদিকে টেনে ধরে নীলের বাড়াটা সংযোগ করতে সাহায্য করে।নীল চাপ দেয়,দীপা সুখে শিৎকার দেয়।
--ওঃ নীল,তুমি আমাকে এত ভালবাসো কেন বলোনি আগে?
--আমি তোমার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভালবাসি,তুমি কি তা বোঝো না?
--আমার প্রানে বাজে একি আনন্দ গান?
--তুমি বলছিলে তোমার গান গাইতে ইচ্ছে করছে--গাইবে?
--এইভাবে? সত্যি নীল তুমি ছেলেমানুষ।
--আমি জানি না।এই ঝড়ের রাতে একটা গান শুনতে ইচ্ছে করছে।
দীপা ঠেলে নীলকে চিৎ করে উত্থিত পুরুষাঙ্গের উপর নিজের যোনীমুখ স্থাপন করে শরীরের ভার ছেড়ে দিতে পুর পুর করে ঢুকে গেল।উঃ--মাগো এত সুখ! এভাবে নীলের অস্তিত্ব তার মধ্যে ভরা থাক। মনে মনে ভাবে এমনি গাথা থাক চিরকাল। দীপার একটা পা নিজের বুকে টেনে নিয়ে হাত বোলাতে থাকে নীল।
--কতকাল ছেড়ে দিয়েছি গান,এখন কি আর পারবো?
--পারতেই হবে দীপু, কেন পারবে না সোনা?আমি যে অনেক আশা নিয়ে ছুটে এসেছি। আবার সব কিছু নতুন করে শুরু করবো।
একসময় দীপা গুন গুন করে শুরু করে,'আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার/পরান সখা বন্ধু হে আমার.....।' কপোল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে যেন মনের সব গ্লানি চোখের জল হয়ে ঝরে পড়ছে। একসময় গান শেষ হয়।ঘরে একটা থমথমে পরিবেশ।মৃদু সঞ্চালন করতে থাকে কোমর। বৃষ্টির দাপট ধীরে ধীরে কমতে থাকে।গুদের মধ্যে অনুভব করে বর্ষার প্লাবণ।
নীল শিৎকার দিয়ে ওঠে,দীপা-আ-আ--আহ-আহ-আঃ।
দীপা বুকের উপর শুয়ে জড়িয়ে ধরে নীলকে।মিলনে এত সুখ এমনভাবে আগে কখনো টের পায়নি দীপা। নীলের বুক ভেসে যায় দীপার চোখের জলে।
দীপাকে বুক থেকে নামিয়ে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ফিরে আসে। মেলে দেওয়া প্যাণ্ট টি-শার্ট প্রায় শুকিয়ে গেছে।পোষাক বদলাতে বদলাতে বলল,পরশুদিন আমরা রেজিস্ট্রি করবো।তুমি রেডি হয়ে থাকবে।
--পরশু? তুমি বাড়িতে জিজ্ঞেস করেছো?
--আমার সব জিজ্ঞেস করা হয়েছে।
--একটু ভেবে দেখলে হত না? দীপার মনে সংশয়।
--আর না, ভাবতে গিয়ে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে,আর আমি ভাবতে চাই না।যদি তোমার মনে কোন দ্বিধা থাকে আমাকে অকপটে বলতে পারো।
--না-না আমি তা বলছি না।পরে কোন আফশোস করবে না তো?
-- রেজিস্ট্রি করে তোমাকে তোমার বাড়িতে পৌছে দেবো।তারপর দিনক্ষন দেখে সানাই বাজিয়ে পতিগৃহে গমন।
দীপার মন কোথায় হারিয়ে গেছে।এত সুখ কি তার সইবে?আবার বাড়ীর সবার সঙ্গে দেখা হবে।মিতুর সঙ্গে দেখা হয়না কতকাল?
--কি হল কি ভাবছো?
--শুনছি তো।উদাস গলায় বলে দীপা।হঠাৎ খেয়াল হয়,বিছানার চাদরে মাখামাখি,এ মাঃ দেখেছো কি হল?
--তোমার জন্য তো,তুমি নীচে থাকলে এমন হত না।
--তোমায় বুকে নিয়ে গান গাইবো? আমি পারি?
বৃষ্টি ধরেছে।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলে ব্রাশ করে ঘুরে দাড়াতে দীপা বলল,তুমি চলে যাবে? জানো তোমাকে ছেড়ে থাকতে হবে ভেবে আমার কান্না পাচ্ছে।
-- লক্ষীটি মাঝে আর একটা দিন,পরশু তো আমি আসছি। তুমি রেডি হয়ে থেকো।
দীপা এগিয়ে এসে গলা জড়িয়ে চুমু দিয়ে বলে,ছাড়তে ইচ্ছে করছে না গো।
--আর তো কটা দিন।নীল বলে।
সুখ-ক্লান্তিতে টই-টম্বুর মন নিয়ে সিড়ি দিয়ে নীচে নামে নীল।উপর হতে দীপা চেয়ে থাকে, দৃষ্টিতে ঝরে হাহাকার বাদল ধারার মত।
সারা রাত ঘুম হয়না,দীপু পরশু দিন আসবে।বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে।মনে পড়ে স্কুলে যাতায়াতের পথের ধারে বকুলতলায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকত নীল।দেখেও না-দেখার ভান করে চলে যেত দীপা।মনে মনে গজরাতো ক্যাবলাকান্ত মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা।আজ সে যদি উদ্যোগী না হতো তাহলে কিছুই হতোনা।এত সুখ সে জীবনে পায়নি তবু মনের মধ্যে কিসের একটা খচখচানি অনুভব করে।পরশুদিন মানে কালকের দিন পরেই।

ক্রমশ]
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#16
13-05-2015, 06:44 PM
(12-05-2015, 07:14 PM)babi_sonai007 : Darun Jomeche mama chaliye jan aamra acchi aapnar sathe

ধন্যবাদ ভাই।
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#17
14-05-2015, 12:17 PM




।।১৫।।



বাংলোর সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে ট্যাক্সি,এসপির বাংলো সবাই চেনে।ড্রাইভারের ডাকে সম্বিত ফেরে।তাকিয়ে দেখল,লাইট জ্বলছে।কাউকে দেখতে পাচ্ছে না।ভাড়া মিটিয়ে নেমে পড়ে নীল।দুজন সান্ত্রি এসে স্যালুট করে দাড়ায়।নীল হাত মাথায় ঠেকিয়ে ভিতরে চলে যায়।এতরাত হল কেউ কি ঘুমায়নি?দরজার সামনে দাড়াতে দরজা খুলে দিল দিলু।
--আচ্ছা ভাইজান তোমার আক্কেলটা কি?বাদলার দিন বলা নেই কওয়া নেই।তুমি কি ভাবো কেউ চিন্তা করার নেই?
এই ভয়টা করছিল নীল।মাকে কিছু একটা বোঝালে বোঝে কিন্তু একে কে বোঝাবে?দিলুটা মাথা খারাপ করে দেবে।কিছু বলা যাবে না তাহলে আবার মার অভিমান হবে।
--এত গুলো কথা বললাম তা একটা জবাব তো দিতে হয়?
দিলু গলা চড়িয়ে ডাক দেয়,আম-মু-উ-উ।
--চুপ কর দিলু, খুব ক্লান্ত লাগছে কাল সব বলবো।
--তা না হয় বললে,কিন্তু এভাবে চললে শরীর ঠিক থাকবে ভেবেছো?
--আচ্ছা এরপর তোর কথা শুনে চলবো।
--মনে থাকে যেন।দিলু ভাত দেবার ব্যবস্থা করে।
--এ্যাই তুই কি এ বাড়ির চাকর?
নীল তাকিয়ে দেখল সরমা।বোধ হয় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।গোলমালে ঘুম ভেঙ্গে গেছে।
--আম্মু আপনি আবার এলেন কেন?
--তুই বেশি চালাকি করবি না।সর আমি ভাত দিচ্ছি।
--আপনি কি বাড়ির দাসী নাকি?
--দাড়া তোর মস্করা করা দেখাচ্ছি।
আনোয়ার হোসেন দিলু পালিয়ে যায়।মা মুখ টিপে হাসেন।
--তোমার ভয়ে পালাল।নীল বলে।
--ও পালাবে?দেখ কোথায় আড়ালে দাঁড়িয়ে আমাদের কথা শুনছে।
বলতে না বলতেই দাত বের করে হাজির দিলু।
--কোথায় থাকিস এত রাত অবধি?দিলু তো তোকে খুজতে বের হচ্ছিল।আমিই মানা করলাম।ক'দিন আগে একটা খুনেকে ধরেছিস রাগ থাকতে পারে,ও বলছিল।
যতক্ষন থাকবে মা বকে যাবে্ন।নীল কোন উত্তর দেয় না। মনে তখনও ভাসছে দীপুর ছবি।
ওর সম্পর্কে সব কথা জানা হয় নি,জানার প্রয়োজন বোধ করে না।বুঝেছে দীপু তাকে সত্যিই ভালবাসে। কথাটা পাড়তে হবে মার কাছে।এই রাতে নয় কাল সকালে রয়েসয়ে মার মনোভাবটা বুঝতে হবে।মায়ের অমতে কোন কিছু করা তার পক্ষে অসম্ভব।
কাকের ডাকে ভোর হয়।সরমা ছেলের মাথার কাছে চা নামিয়ে রেখে ছেলেকে ডাকেন।নীল ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে,কাল অনেক রাতে ঘুমিয়েছে।
--মা আমার কাছে একটু বসবে? মাকে বলে নীল।
--এখন? অবাক হয়ে ছেলেকে দেখে্ন সরমা। আচ্ছা,রান্নাটা নামিয়ে আসছি।
নীল চায়ে চুমুক দিতে থাকে।একটু পরেই অফিসের লোকজন এসে পড়বে।রান্না ঘর সামলে সরমা আসেন,সঙ্গে লেজুড়টাও আছে।দিলুর সামনেই মাকে সব কথা বলে নীল।সরমা চুপচাপ শুনছিলেন আর মনে পড়ছিল উকিলবাবুর বউয়ের কথা।ডাক্তারবাবুর মেয়ে বাড়ি হতে বেরিয়ে গেছে এই আলোচনা বছর চার-পাঁচ আগে তখন ঘরে ঘরে। উকিলবাবুর বউয়ের সৌজন্যে সরমাও কিছুটা জানে্ন।নীল কথা শেষ করে মায়ের মুখের দিকে তাকায় অপেক্ষায় অধীর।

--যা আমি ভল করে জানি না সে বিষয়ে আমি কি বলব?মানুষ আশা করে তাই হতাশ হয়, হতাশা থেকে মর্মাহত ।কেউ বাস্তবকে মেনে নিয়ে নতুন করে ভাবে আবার কেউ মেনে নিতে পারে না অভিমানে আত্মনিগ্রহ করে।সরমা একটু থামেন।
আনোয়ার হোসেনও গভীর মনোযোগ দিয়ে তার আম্মুর কথা শোনে।কথা শুনে মনে হয় তার আম্মু সহজ মানুষ না।
আবার সরমা শুরু করে্ন,তোমাকে বুঝতে হবে এতদিন পরে কেন? একি নিছক ভালবাসা নাকি বড় চাকুরিয়ার প্রলোভন? তুমি যদি সুখী হও তাতেই আমি খুশি। আমি তার কাছে অন্যকোন দাবী করতে যাব না।বিধাতা যা দিয়েছে তাতেই আমি সন্তুষ্ট।
--আমু এইটা ন্যয্য কথা বলেছেন।জানেন আম্মু,আমিও ভাল হতে চেয়েছিলাম।যখন সেই সুযোগ পেলাম না,চোর-জোচ্চুরির পথ ধরলাম।
--চুরি করলে ঘেটি ধরে বিদায় করবো।সরমা বলেন।
--যা পারবেন না তা বলেন কেন?
--দেখবি পারি কিনা?সরমা ফুসে ওঠে্ন।
--ঘেটি ধরতে পারবেন কিন্তু বেটারে বিদায় করতে পারবেন না।
পেটে না ধরলেও এই ছেলেটা সরমার কাছে নীলুর চেয়ে কম নয়।প্রথম যখন এল মনে একটু খুতখুতানি ছিল না বললে মিথ্যে বলা হবে।অজ্ঞাতসারে কখন যে হৃদয়ে পাকা আসন করে নিয়েছে বুঝতেই পারেন নি।মানুষের সম্পর্কগুলো বড় অদ্ভুত। পরিবেশ গম্ভীর হয়ে ওঠে। বাস্তবিক দিলু মাকে বেশ ভাল করে চিনেছে।সরমা দিলুর কথায় আমল না দিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে যান। বসে বসে গল্প করলে তো তার চলবে না।একজন কনেষ্টবল এসে স্যালুট করে দাঁড়ায়,স্যর ডিএম সাহেবের ফোন।নীল দ্রুত অফিস ঘরের দিকে যায়।কিছুক্ষন পর ফিরে আসতে দিলু বলে, ভাই জান,আম্মু তো গ্রীন সিগন্যাল দিল।এইবার ঝাপাইয়া পড়েন।নীল চোখ পাকাতে দিলু চলে যায়। শিবেনকে ফোন করে নীল।
--কি ব্যাপার?
--শিবু খুব জরুরী দরকার। একবার সময় নিয়ে আসতে পারবি?
--এভাবে কেন কথা বলছিস? কি হয়েছে কি?
--অনেক কথা, তুই আয় সব বলবো। এখানেই খাওয়া-দাওয়া করবি।ফোন রেখে দেয় নীল।এই সময় শিবুর মত একজনকে খুব দরকার।
শিবেনের কপালে ভাজ পড়ে নিশ্চয়ই কিছু গুরুতর ব্যাপার। বিষয়টা পারিবারিক না অফিস সংক্রান্ত? অফিসের নানা বিষয় নিয়ে নীল বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে।একজঞ আইপিএস অফিসার তারমত একজন ব্যাঙ্ক কর্মীর সঙ্গে আলোচনা করে শিবেন এজন্য নিজেকে সম্মানিত বোধ করে।নীলের সব ব্যাপারে একটু খুতখুতানি থাকলেও সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে অসম্ভব দৃঢ়তা।
পায়েল এসে জিজ্ঞেস করল,কার ফোন গো?তোমার বন্ধু দেবদাস?
শিবেন হাসে,বিয়ের পর ছেলেবেলার সব গল্পই বউয়ের সঙ্গে করেছে।পায়েল আড়ালে নীলকে দেবদাস বললেও নীলকে খুব সমীহ করে।পায়েল জিজ্ঞেস করে,কি বলছিল নীল ঠাকুর-পো?
--বলছিল কি দরকার আছে,যেতে।
--তাহলে আজ ব্যাঙ্ক কামাই।একটা কথা জিজ্ঞেস করব,সত্যি করে বলবে?
পায়েল আবার কি জানতে চায়? শিবেন বউয়ের দিকে তাকায়।
--মেয়েটা কি খুব সুন্দরী ছিল?
শিবেন স্বস্তির শ্বাস ফেলে,মেয়েলী কৌতূহল।তারপর মজা করে বউকে জড়িয়ে ধরে বলল, আমার কাছে তোমার মত সুন্দরী কাউকে দেখিনা।
পায়েল বলল,ইয়ার্কি না--তুমি আমার কথার উত্তর দাও।
শিবেন গম্ভীর হয়ে যায়।কি বলবে রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতি?হালকা সুরে বলে,কবেকার কথা সেকি মনে আছে?অবাক লাগে এরকম একটা মেয়ে কি করে এমন ভুল করলো?
--হ্যাগো তুমি কোনো ভুল করোনি তো?
শিবেন ঘুরে পায়েলকে দেখে প্রশ্নের অর্থ বুঝতে পারে,পায়েলকে জড়িয়ে ধরে পিষ্ঠ করতে করতে বলল,ভুল কি ঠিক জানিনা,আমি সুখী
--কি হচ্ছে কি কেউ এসে পড়বে--ছাড়ো।


ক্রমশ]
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#18
14-05-2015, 10:15 PM




।।১৬।।


ডিএম সাহেব আবার নতুন কি খবর শোনায়,নীল দুজন দেহরক্ষী নিয়ে বেরিয়ে পড়ল।যাবার আগে দিলুকে বলে গেল,শিবেন আসবে।আমি কিছুক্ষনের মধ্যে আসছি।আসলে
বসতে বলবি।
--না দাঁড়িয়ে থাকতে বলবো।তুমি যেখানে যাচ্ছো যাও।দিলু উত্তর দিল।
এমনভাবে নীলু ডাকল শিবেনের পক্ষে আজ আর ব্যাঙ্কে যাওয়া হবে না।পায়েল বলছিল কি রকম বন্ধু তুমি বউ কোলে নিয়ে শুয়ে থাকো বিবেকে বাধে না?
--কি মুস্কিল মাসীমা বলছেন আমিও বলেছি শুনলে তো? দোকান থেকে পছন্দমত একটা বউ কিনে কি ওর হাতে তুলে দেবো?
খিল খিল করে হেসে ফেলে পায়েল।দোকানে সাজানো থাকে ম্যানিকুইন সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে শাড়ী ব্লাউজ পরা দেখতেই ভাল লাগে কিন্তু ওই পুতুল দিয়ে কি বউয়ের কাজ হবে? শিবেন বেরিয়ে পড়ে,বাসে এসপি বাংলো যেতে ঘণ্টা খানেকের পথ।যখন পৌছাল শুনলো আধঘণ্টা আগে নীল বেরিয়েছে।মাসীমার কাছে সব শুনলো।দীপাকে খুজে পেয়েছে?
--মাসীমা আপনি কি বলেছেন?
--কি আবার বলবো? আমি জানি মানুষ পচে মরার পর,তার আগে না।ভুল করে আবার তা মানুষই সংশোধন করতে পারে। বিশ্বাস হারানো পাপ।
শিবেন কথা বাড়ায় না।অবাক লাগে এই বিধবা মহিলা যেভাবে ভাবতে পারেন সে কেন পারে না।মাসীমা লেখাপড়া বেশিদুর করেনি।কিন্তু লেখাপড়া জানা মানুষ কি জীবনকে এভাবে ভাবতে পারে?
নীল এল যখন তখন ঘড়িতে বারোটা বাজে।
--মার কাছে সব শুনেছিস?
--হ্যা শুনলাম।আমি ভাবছি--।
--এখন থাক।নীল বাধা দেয়।
নীলকে খুব গম্ভীর মনে হয়।শিবেন বন্ধুকে চেনে জিজ্ঞেস করে,কোথায় গেছিলি?
--সর্বত্র গোলমাল।
--কেন কি হল?
--ডিএম সাহেব ডাব্বুর কেস ফাইল মি. সহায়কে দিতে বললেন।কেসটা আমার হাত থেকে নিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য কি বুঝতে পারছিস?
--সব ব্যাপারে নিজেকে ইনভল্ভ করার দরকার কি?তোর যা করার তুই করেছিস, এবার হ্যাণ্ডওভার করতে বলছে করে দিবি।তোর এত কি দায়? শিবেন বলে।
খাওয়া-দাওয়ার পাট চুকিয়ে দুজনে বেরিয়ে যায়,খানিক গিয়ে নীল ফিরে আসে।
--কি হল ভাইজান?
--তুইও চল।
দিলুর খুব উৎসাহ,দ্রুত পোশাক বদলে রওনা হল।শিবেন জিজ্ঞেস করল,কিরে গাড়ি নিবি না?
--ব্যক্তিগত কাজে যাচ্ছি।ট্যাক্সি নিয়ে নেব।
--এখন কোথায় যাচ্ছি?
--পুরানো পাড়ায় রাণী পার্ক।
শিবেনের কাছে সব রহস্যময় মনে হচ্ছে। ট্যাক্সিতে উঠে বসল।দিলু ড্রাইভারের পাশে পিছনে শিবেন আর নীল। গাড়ি ছুটে চলল।শিবেন বোঝার চেষ্টা করে এতদিন পরে পুরানো পাড়ায় কেন?
--নীলু তুই ভাল করে ভেবে দেখেছিস তো?শিবেন জিজ্ঞেস করে।
--এতো আমার বহুকালের সিদ্ধান্ত তুই অন্তত জানিস।এখন ভাবাভাবির কি আছে?
--তা জানি।সময় পরিস্থিতি বদলেছে।তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত বদল করে মানুষ।
--এক ফর্মুলা সর্বত্র খাটে না।যখন ছাত্র তুই আমার বন্ধু ছিলি এখন দুজনেরই অবস্থা বদলেছে কিন্তু বন্ধুত্ব কি বদলেছে? তা হলে বলবি।
নীলের মুখচোখ দেখে প্রশ্ন করতে ভরসা হয় না।কতক্ষন এভাবে চুপ করে বসে থাকা যায়? হাজারো প্রশ্ন গুড় গুড় করে মনে ট্যাক্সির মধ্যে সেসব তোলা সমীচীন হবে কিনা ভেবে শিবেন দিলুকে জিজ্ঞেস করে, দিলু আমাদের কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে?
উত্তর দিল নীল,তোরা সাক্ষী দিবি।
--ও তুই তাহলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিস?
--ভাইজানের মনে একবার যেইটা আসবে তার থেকে কেউ--।নীলের সঙ্গে চোখাচুখি হতে শেষ করতে পারে না দিলু।
ইতিমধ্যে গাড়ি রানী পার্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে।ডা.বোসের বাড়ির সামনে ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে পড়ে।নীল ট্যাক্সি হতে নেমে বলে,শিবু তুই আমার সঙ্গে আয়,দিলু তুই বস।
কলিং বেল টিপতে দরজা খুলে দেয় মিতালি।প্রথমে চিনতে না পারলেও পরে একগাল হেসে বলে, মাস্টারমশায় আপনি?
--আণ্টি আছে?
--হ্যা,দাড়ান ডেকে দিচ্ছি।আপনি ভিতরে আসুন না? বাঃবাঃ কতদিন পরে এলেন?
--তুমি শেষ পর্যন্ত ডাক্তারী পড়া শুরু করলে?
--ওমা আপনি জানেন?বাপি এত করে বলল কি করব বলুন?
একটা ঘরে বসিয়ে মিতালি চলে গেল। শিবেন ভাবছে নীলের কি মতলব?
--ও তুমি? আমি তো চিনতেই পারিনি।শুস্ক হাসি টেনে মিসেস বোস বললেন।
নীল দাঁড়িয়ে উঠে জিজ্ঞেস করে,ভাল আছেন তো আণ্টি?
--উম? হ্যা ভাল আছি।মিসেস বোসের মনে শঙ্কার ছায়া।
নীল ধীরে ধীরে সব কথা বলতে থাকে।এমন সময় ডাক্তার বোস ঢুকে বলেন,না।তুমি ওকে এ বাড়িতে আনবে না।অনেক কালি মেখেচ্ছি--।
--আহা ওর কথাটা শোন ,না শুনেই বলে যাচ্ছ?মিসেস বোস স্বামীকে বাধা দেন।
--কেন বাপি দিদিভাই এলে কি হবে?মিতালি জিজ্ঞেস করে।
--তুমি চুপ করো। মেয়েকে থামিয়ে নীলকে জিজ্ঞেস করে,কি বলছিলে?
--আমি রেজিস্ট্রি করে এখানে রেখে যাবো।তারপর দিনক্ষন দেখে সামাজিক বিয়ে--।
--শুনেছি তুমি পুলিশের উচু পদে চাকরি করো। ওর জীবন-যাপন সম্পর্কে কোন খবর রাখো? ডাক্তার বোস জিজ্ঞেস করেন।
--না,আমার যা জানার জেনেছি।তার বেশি আমার জানার দরকার নেই।নীলের কণ্ঠে দৃঢ়তা।
ডাক্তার বোস হতবাক হয়ে কিছুক্ষন নীলের দিকে তাকিয়ে থাকেন।তার চোখের কোনে বুঝি জল চিকচিক করছে।দ্রুত ঘর ছেড়ে চলে গেলেন।
--দেখো বাবা,তুমি যা ভাল বোঝো করো। মেয়েটা কেন যে এমন ভুল করলো? মিসেস বোস আঁচল দিয়ে চোখ মোছেন।
--আমি আসছি আণ্টি।
--দিদিভাইকে কখন আনবেন মাস্টার মশায়? মিতালি জিজ্ঞেস করে।
--সন্ধ্যে বেলা, এখন আসি।ওরা বেরিয়ে যায়।
মিতালির মনে জলতরঙ্গ বাজে।কতদিন পরে দিদিভাইয়ের সঙ্গে দেখা হবে,মাস্টারমশায়ের সঙ্গে বিয়ে কি মজা হবে।
নীচে নামতে দিলু বলল,ভাইজান ঐ ভদ্রলোক তোমারে খোজে।
নীল দেখল পানের দোকানে পান কিনছেন হরষিত বাবু,ম্যারেজ রেজিস্ট্রার।পান মুখে পুরে আসতেই নীল বলল,দিলু তুই পিছনে আয়। হরষিতবাবু গাড়ীতে উঠতেই আবার চলতে শুরু করে।
ড.বোস বেরিয়ে এসে জিজ্ঞেস করেন,চলে গেছে ওরা?
--কেন কিছু বলতে?
--ভাবছিলাম সঙ্গে যাব কিনা?
নীলদা তো চলে গেছে।মিতালি বলল।



ক্রমশ]
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


kamdev Offline
Soldier Bee
**
Joined: 04 Nov 2013
Reputation: 130


Posts: 344
Threads: 26

Likes Got: 14
Likes Given: 0


db Rs: Rs 35.58
#19
15-05-2015, 12:43 PM (This post was last modified: 15-05-2015, 12:45 PM by kamdev.)




।।১৭।।



আবার ট্যাক্সি ছুটে চলল।নীলকে একটু হালকা মনে হচ্ছে। এতক্ষনে শিবেন বুঝতে পারে নীলের পরিকল্পনা।শিবেন মুখটা এগিয়ে মৃদু স্বরে বলে,পাঁচজন হয়ে গেছে ফেরার সময় আরেকটা ট্যাক্সি নিতে হবে।
কথাটা হরষিত উকিল শুনতে পেয়ে বলল,আমি ওখানেই নেমে যাবো,একটু কাজ আছে।
--না না,আরেকটা ট্যাক্সি নিতেই হবে দীপুর মালপত্তর আছে,এখন ভাবছি একটা টাটা সুমো আনলে ভাল হতো।
শিবেন আড়চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,দীপুর সঙ্গে তোর এ ব্যাপারে সব কথা হয়েছে?
--দীপু? ভাবিজানের নামখান বেশ মিঠেল শুনতে লাগে।দিলু সামনে বসে বলে।
--হ্যা আমাদের কথা হয়েছে।শোন দিলু,তুই আজ ওর সামনে বেশি বকবক করবি না।এ তোর আম্মু না, বাজে কথা ও পছন্দ করে না।নীল মজা করে বলে।
--কিন্তু একখান কথা না কইলেই না।দিলু বলে।
--কি কথা?
--রেজেস্টারির পর ভাবিজানরে বেশিদিন ফেলাইয়া রাইখেন না।মচ্ছব কইরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি নিয়া আসবেন।
--তাতে তোর কি লাভ?
--আমার কথা বলি না আম্মুর কথাডা ভাবেন।বয়স হইছে তারে অখন বিশ্রাম দেওন দরকার।
--তোকে অত ভাবতে হবে না।বকবক করলে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেব।
--দ্যান নামায়ে দ্যান।আমি আম্মুরে গিয়া বলবো।ফিক ফিক করে হাসে দিলু।
প্রায় ঘণ্টা খানেক পর চাদনীতে এসে গাড়ি দাড়ায়।মুসাফিরখানার সামনে কিছু লোক জমেছে।
নীল যেতে হোটেলের মেয়েটি এগিয়ে এসে বলে,আসুন স্যর।স্থানীয় থানার ওসি চিনতে পেরে স্যালুট করে।
--কি ব্যাপার?
--ভেরি স্যাড কেস স্যর।ঠিক বুঝতে পারছি না স্যর, দেখি ময়না তদন্তে কি বলে? কেউ বলছে ডাব্বুর লোকজনের কাজ।
ভীড় ঠেলে ওসি একটি ট্রলির কাছে নিয়ে গেল। ট্রলির উপর শায়িত কাপড়ে ঢাকা একটি দেহ।একটি ধপধপে ফর্সা হাত বেরিয়ে ঝুলছে।ধক করে ওঠে বুকের মধ্যে। কাপড় সরাতে একটা শীতল শিহরন অনুভব করে সারা শরীরে। অজান্তে অস্ফুটে মুখ হতে বেরিয়ে এল, একী দীপু!
--আপনি চেনেন স্যর?
শিবেন উকি মেরে দেখল,চোখে মুখে কোনো বিকৃতি নেই,নিবিড় প্রশান্তিতে ঘুমিয়ে আছে দীপা।কানের কাছে মুখ নিয়ে দীপা বলে ডাকলে বুঝি চোখ মেলে তাকাবে।চোখ ঝাপসা হয়ে আসে,বন্ধুর দিকে তাকাতে পারছেনা।
হোটেল ছেড়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ায় নীল।শিবেন তাকে অনুসরন করে।হরষিত বাবু বিস্মিত চোখে শিবেনের দিকে তাকালে শিবেন বলল,এর সঙ্গেই রেজিস্ট্রি হবার কথা ছিল।নীল নিজেকে অপরাধী মনে করে,তাকে এড়াবার জন্যই এই পথ বেছে নিল দীপা।অস্বস্তির বোঝা চেপে বসেছে।
--ভাইজান, আমি কিন্তু একটাও বাজে কথা বলিনি।রুদ্ধ কণ্ঠে বলে দিলু।
নীলের মনের আকাশ ধীরে ধীরে ঘন মেঘে ঢেকে যাচ্ছে।গাঢ় মেঘ ঘিরে ফেলছে তাকে।হোটেলের মেয়েটি এসে বলে,স্যর উনি এইটা আপনাকে দিতে বলেছিলেন।
একটি খাম এগিয়ে দেয় মেয়েটি।নীল হাত বাড়িয়ে খামটি নিয়ে বলে,একবার ওসিকে ডাকুন।সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসে ওসি স্যালুট করে,ইয়েস স্যর।
--আপনি ময়না তদন্তের পর আমাকে খবর দেবেন।উনি আমার আত্মীয়।
--ভেরি স্যরি স্যার। আমি আর যাবোনা,এদিকে একটু কাজ আছে।হরষিত উকিল বললেন।
ট্যাক্সি ছুটে চলেছে এসপি বাংলোর দিকে।কারো মুখে কোন কথা নেই।সারাক্ষন বকবক করে যে দিলু কে যেন তার মুখে কুলুপ এটে দিয়েছে।খাম খুলতেই সুন্দর একটা গন্ধ নাকে লাগে।নীল চোখের সামনে মেলে ধরে চিঠিটা।

'তোমায় কি বলে সম্বোধন করবো এসপি সাহেব?আমার রাজা? পরান সখা?নাকি প্রানের দেবতা? ভাবার মত বেশি সময় আমার হাতে নেই।তাই শুরু করলাম সম্বোধন ব্যতিরেকে।পরশু রাতে তোমার প্রতিটি অঙ্গের স্পর্শ নিয়ে সমস্ত গ্লানি মুক্ত হলাম।যখন তুমি এ চিঠি পড়ছো আমি তখন ধরাছোয়ার বাইরে অন্য জগতে।মনে পড়ে তুমি প্রশ্ন করেছিলে 'নীলকান্ত কে?'লজ্জায় সে রাতে উত্তর দিতে পারিনি।এখন অকপটে বলছি, হোটেলের খাতায় তোমার মর্যাদা রক্ষায় ভুল নাম লিখিয়েছিলাম। নামটি হবে নীলকণ্ঠ সেন।আরো অনেক প্রশ্ন ছিল তোমার চোখে, পাছে আমার কষ্ট হয় তুমি উচ্চারন করোনি।কিন্তু আমাকে বলতে হবে।
আজ তোমাকে একটি মেয়ের কথা বলবো,নেহাৎ স্কুল পড়ুয়া সাধারন মেয়ে।স্কুলে যাতায়াতের পথে রোজই দেখতো রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে আছে একটি ছেলে দীঘির মত কালো উজ্জ্বল চোখ মেলে।মুখে গম্ভীরভাব এটে হাসতো মেয়েটি মনে মনে।অপেক্ষা করতো কখন ছেলেটি তাকে মুখ ফুটে কিছু বলে।দিনের পর দিন যায় অপেক্ষা সার হয় কিন্তু সেই মুক মুখে ভাষা ফোটে না।প্রচণ্ড অভিমান হয়,কিসের এত অহঙ্কার?শান্ত প্রানে ঈর্ষা জাগাতে মেয়েটি শুরু করলো নতুন বিপদজনক খেলা।বলতে পারো আগুন নিয়ে খেলা। হায়! তাতেও ধ্যান ভাঙ্গে না উপরন্তু সেই আগুনে পুড়ে দগ্ধ হল সেই মেয়েটি। অভিমান রুপান্তরিত হয় ক্রোধে।নিজেই নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে,দগ্ধ করেছে।ছেলেটি সাবধান করেছিল কিন্তু তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে।তার এই ভালমানুষীতে মনের আগুন দীপ্ত তেজে জ্বলে ওঠে। মেয়েটি নামতে থাকে সিড়ি বেয়ে নরকের আরো গভীরে।
তুমি হয়তো ভাবছো বিয়ের কথা না বললে হতভাগিনী আরো কিছুকাল বাঁচতো।তুমি ঠিকই ধরেছো অসম্মান অপমানের ক্লেদ মাখতে মাখতে আরও কিছুকাল আমি বেচে থাকতাম। কিন্তু নী তোমার দীপাকে পাপের পাঁক হতে তুমি মুক্তি দিয়েছো।্লক্ষীটি কোনো খেদ রেখোনা। স্বামীর অভিশাপে অহল্যা শাপগ্রস্থা হয় পরে ভগবানের স্পর্শে ঘটে তার শাপমুক্তি।তুমি যখন বললে, আজও আমাকে ভালবাসো,আমার ভিতর লোভী মেয়েটা নেচে উঠেছিল আনন্দে।অনেক কষ্টে তাকে দমন করি।কেন না আমার এই দেহ অপবিত্র আমি কীটদ্রষ্ট এক কুসুম।তুমি বলো এই ফুল কি দেবতাকে অর্ঘ্য দেওয়া যায়? না,সে আমি কিছুতেই পারবো না।সতীর দেহত্যাগে শুরু হয়েছিল শিবের তাণ্ডব নৃত্য। সতীর দেহ ছিন্নভিন্ন হবার পর শান্ত হয়েছিল ভোলানাথ।আমি জানি যতদিন বেচে থাকবো চলবে তোমার পাগলামী। তাই এছাড়া আমার কোন উপায় ছিল না গো।পরজন্মে দেখা হলে আর আহবানের অপেক্ষা করবো না,ঝাপ দিয়ে বুকে পড়বো। তখন তুমি আমাকে আলিঙ্গন করবে না নীল? আমি জানি দীপু তোমার কত আদরের তার কথার অন্যথা করার সাধ্য তোমার নেই।বাপি মাম্মি মিতুকে বোলো যেন আমাকে ক্ষমা করে।প্রনাম জেনো।
তোমার একান্ত, দীপালি সেন।'

--কার চিঠি? শিবেন জিজ্ঞেস করে।
নীল চিঠিটা এগিয়ে দেয়।শিবেন চিঠিটা খানিক পড়ে ফেরৎ দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, সত্যি আমি ওকে চিনতে ভুল করেছিলাম।
--শিবেন তুই একটা কাজ করবি?নীল জিজ্ঞেস করে।
শিবেন চোখ মেলে বন্ধুর দিকে তাকায়।নীল বলল,তুই তো পাড়ায় নেমে যাবি?যাওয়ার পথে প্লীজ--।ফুপিয়ে কেদে ফেলে নীল।
--ঠিক আছে ঠিক আছে আমি ড.বোসকে জানিয়ে যাবো।ভাবছি মিতুর কথা--বেচারি বড় আশা নিয়ে অপেক্ষা করছে।
শিবেন নেমে যাবার পর গাড়ী আবার চলতে শুরু করে।দিলু জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।ভাইজানের কষ্ট কিভাবে সে ভাগ করে নেবে ভেবে পায়না?
বাংলোর সামনে ট্যাক্সি দাড়াতে নীল নামে বিধ্বস্ত ভঙ্গিতে। পা টলছে, সরমা এগিয়ে এসে ছেলেকে ধরেন।
--মা, সব শেষ হয়ে গেল।
--আমি জানি বাবা।বউমার শেষ কাজ তো তোকেই করতে হবে।
সরমা মনে মনে ভাবেন,লালসাকে কখনো ভালবাসা বলে ভ্রম হতে পারে কিন্তু প্রকৃত ভালবাসা নিঃস্বার্থ বিনম্র শ্রদ্ধামণ্ডিত।

******সমাপ্ত*******
আমি ক্লান্ত এক পদাতিক
ঘুরে ঘুরে চারদিক
উকি দিই ঘরে ঘরে
অন্দরে অন্তরে।
 •
      Find
Reply


« Next Oldest | Next Newest »
Pages ( 2 ): « Previous 1 2


Possibly Related Threads...
Thread Author Replies Views Last Post
Desi  পরভৃত – কামদেব rajbr1981 4 5,858 22-01-2018, 04:14 PM
Last Post: kamdev
Desi  জীবনের অন্য পৃষ্ঠা\\কামদেব kamdev 40 43,884 07-05-2017, 04:08 AM
Last Post: Roti Kamla
Romantic  ভোদাইয়ের ভূ-দর্শণ /কামদেব kamdev 54 104,030 01-08-2016, 10:33 AM
Last Post: kamdev
Romantic  দোলন চাপার চাপা কথা || কামদেব kamdev 39 47,924 04-06-2015, 08:25 PM
Last Post: kamdev
Desi  নিষিদ্ধ অভিলাষ dustuchele73 4 9,777 16-05-2015, 02:21 AM
Last Post: dustuchele73
Desi  রূপাই নদীর রূপকথা )( কামদেব kamdev 23 23,336 14-04-2015, 10:39 PM
Last Post: kamdev
Desi  বার্থ-ডে গিফট /কামদেব kamdev 9 14,330 08-03-2015, 11:45 AM
Last Post: kamdev
All In One  যে যেমনভাবে চায় /কামদেব kamdev 89 81,531 28-02-2015, 10:17 PM
Last Post: kamdev
Desi  যার যেখানে নিয়তি /কামদেব kamdev 29 42,048 06-09-2014, 09:33 PM
Last Post: rajbr1981
Desi  ভোদা পুজো /কামদেব kamdev 4 13,743 25-08-2014, 03:01 PM
Last Post: kamdev

  • View a Printable Version
  • Subscribe to this thread


Best Indian Adult Forum XXX Desi Nude Pics Desi Hot Glamour Pics

  • Contact Us
  • en.roksbi.ru
  • Return to Top
  • Mobile Version
  • RSS Syndication
Current time: 30-07-2018, 12:27 AM Powered By © 2012-2018
Linear Mode
Threaded Mode


desi masala aunty pics  sanka naku  adult lactation story  new hot sex stories in telugu  desi models photoshoot  mms scandal clip  urdu sex stories with pictures  sakila sex pictures  exbii desi aunty  sexy hindi story bhabhi  meri apni kahani  bangla hindi sex  www.tamilsexstories.com  tamil sexy aunty photos  tamil dex stories  wives exhibitionist  bangla porn book  sexy gujarati story  sexy comic hindi  sneha fake photos  bhaiya aur bhabhi  chachi ko choda  desi kahani with photo  ma ke sath sex  malayalam sex stories malayalam  tamil erotic story  indian celeb fakes  mard ka lund  izzat looti  sex in school desi  marthi sexy katha  desi stories telugu  sexy gand girls  desi aunty nude bathing  undressed couples  lady boys nude  sex videos அமெரிக்க கானடா  penelope black diamonds  chut chaat  urdu font hot story  kerim koram  telugu cartoon sex stories  www.chachi ki chudai.com  tamil aunty dirty story  xxx selfshot  sali chudai story  nude pics of sania mirza  madhuri dixit sex film  lund ki pyasi  paki boobs  bur chodna  real sex stories in telugu  read urdu sexy story  gay gandu  tollywood bluefilms  marathi chavat katha jaunya  meri sexy wife  tamil fuc  mallu malayalam story  mallus hot images  incestsexvideos.com  hindi sx story  shreya sex stories  telugu masala sex stories  sex story in oriya  hot telugu sex story  adult stories in hindi font  napeli sax  sali sexy  www.xxx flim  shakeela hot sexy  videos of bluefilm  nude desi actresses  nude big boos  amma puku denganu